পিত্ত পাথরী (Gall bladder Stone) হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা।

পিত্তথলি বা গলব্লাডার লিভারের সাথে সংশ্লিষ্ট পিত্তরস সম্পর্কিত তন্ত্রেরএকটি অঙ্গ। দেখতে একটি ছোট্ট থলির মতো। লিভারের ডান দিকের অংশের ঠিক নিচেএর অবস্থান। গলব্লাডার তার নিজস্ব নালী বা সিস্টিক ডাক্টের মাধ্যমে মূল পিত্তনালী বা বাইলডাক্টের সাথে সংযুক্ত। লিভার থেকে নির্গত বাইল বা পিত্ত সাময়িক ভাবে পিত্তথলিতে জমা থাকে। হজম ক্রিয়ার প্রয়োজন মতো পিত্তথলির পিত্ত আবার পিত্তনালীর মাধ্যমে খাদ্যনালীতে নির্গত হয়। গলব্লাডার পিত্তের ঘনত্ব বৃদ্ধি করে এবং ইলেকট্রোলাইটসের পরিবর্তন করে। এই পিত্ত আমাদের হজমসহ খাদ্যনালীর অন্যান্য কাজে সহায়তা করে থাকে। গলব্লাডারের সাধারণ কয়েকটি অসুখের মধ্যে গলব্লাডারের পাথর অন্যতম। শরীরের যেসব অঙ্গের সাথে বিভিন্ন রসের প্রস্তুত এবং নির্গমের সম্পর্ক রয়েছে সেসব অঙ্গে যেকোনো সময় পাথরের সৃষ্টি হতে পারে, গলব্লাডার বা পিত্তথলি সেধরনের অঙ্গের একটি। গলব্লাডারে পাথরের সঠিক কারণ জানা না গেলেও অনেক অবস্থা বা বিষয়কে এর জন্য দায়ী বলে বিবেচনা করা হয়। সেসব বিষয় হচ্ছে-

ক) গলব্লাডারে অতিরিক্ত সময় পিত্ত জমে থাকা (Biliary stasis) গলব্লাডার বাপিত্তথলির পাথর সৃষ্টির জন্য বহুলাংশে দায়ী। গলব্লাডারের ছোট নালী, পেঁচানো সিস্টিক ডাক্ট, অস্বাভাবিক ভাল্ব, গলব্লাডারের অস্বাভাবিক অবস্থান, পিত্ততন্ত্রের অস্বাভাবিক কার্যকলাপ, ঘন ঘন গর্ভাবস্থা ইত্যাদি কারণেগলব্লাডারে পিত্ত দীর্ঘ সময় ধরে অবস্থান করে।

খ) গলব্লাডারের ইনফেকশন অনেক ক্ষেত্রে দায়ী পিত্তথলির পাথরের জন্য। লিভার, পিত্তনালী, খাদ্যনালীর যেকোনো ব্যাকটেরিয়া অতি সহজে পিত্তথলিতে আসতে পারে।এ ব্যাকটেরিয়া পাথর সৃষ্টির একটি কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে কাজ করে এক বাএকাধিক পাথরের সৃষ্টি করতে পারে।

গ) পিত্তরসের রাসায়নিক পরিবর্তন : পিত্তরস বা বাইলের মধ্যে বাইলসল্ট ওকোলেস্টেরল নির্দিষ্ট একটি পরিমাণে থাকে।

এ পরিমাণের পরিবর্তন হলেও পাথরহতে পারে।গলব্লাডারে পাথরের উপসর্গপেটের ডান দিকের উপরিভাগে তীব্র ব্যথা, ওই ব্যথা পিঠের দিকেও ছড়িয়ে ডানকাঁধ পর্যন্ত আসতে পারে। এ ব্যথা হঠাৎ করে শুরু হয়ে কিছুক্ষণ পর কমেও যেতেপারে অথবা সব সময় অল্প ব্যথা অনুভব হতে পারে। বদহজম বা বমি বমিভাব হতেপারে। সাধারণত অল্প জ্বর হয়ে থাকে। বেশি জ্বর হলে মনে করতে হবে গলব্লাডারেপুঁজের সৃষ্টি হতে পারে, যাকে এম্পায়েমা গলব্লাডার বলা হয়ে থাকে। অনেকক্ষেত্রেই গলব্লাডারের পাথর উপসর্গবিহীন থাকতে পারে।পেটের অন্য কোনো উপসর্গ বা রোগ নির্ণয়ের জন্য আলট্রাসাউন্ড করলে তাতে গলব্লাডারে পাথর নির্ণয় করা যায় এছাড়াও পাথরের অবস্থান, গলব্লাডারের দেয়ালের অবস্থা, গলব্লাডারের পুঁজ, কোনো চাকা ও টিউমার, পলিপ ইত্যাদি অতি সহজে নিরূপণ করা যায়। সাধারণ রক্ত পরীক্ষাতেও গলব্লাডারের ইনফেকশন হয়েছে কি না বোঝা যায়। অপারেশন ছাড়া হোমিও চিকিৎসায় এই রোগ আরোগ্য হয়।

Cardus Mere: পিত্ত পাথরী জনিত পিত্তশুল বেদনা। প্রস্রাব হলুদ, মুখে তিক্ত আস্বাদ, মাঝে মাঝে তিক্ত বমন, পেটের বামদিকে অত্যাধিক ব্যাথা। Q শক্তি অব্যর্থ।

Berberis Vul: প্রচন্ড বেদনা থাকে, টিপলে ব্যাথা বাড়ে। পিত্ত নিঃসরণ কমে যায়। কাদা রঙের কিংবা ছাই রঙের বাহ্য। Q শক্তি।

Cal.Carb: মোটা থলথলে মেদপূর্ণ রোগীদের পিত্ত পাথরী, প্রচন্ড ব্যাথায় রোগী ঘেমে কাতর হয়ে পড়ে। ৩০-২০০ পর্যায়ক্রমে উচ্চশক্তি।

China: দুর্বল রোগীদের পিত্ত পাথরী জনিত বেদনায়। ৬-৩০ শক্তি সেব্য।

Dioscorea: লিভারের স্থান হতে ব্যাথা আরম্ভ হয়ে বুকের ডান পাশে এবং দেহের অন্যান স্থানে চালিত হয়। সোজা হয়ে বসলে বা শয়ন করলে এবং পেছনে হেলে থাকলে ব্যাথা উপশম হয়। Q শক্তি ফলপ্রদ।

Cheananthus: পিত্ত পাথরীর উৎকৃষ্ট ঔষধ। কাদার মত নরম মল, কোষ্ঠবদ্ধ, লিভারে ব্যথা, জিহ্বায় পুরো ময়লার প্রলেপ। পিত্তশুল, খাবারে অনীহা। Q শক্তি প্রযোজ্য।


বায়োকেমিকঃ
Mag.Phos, Nat.phos, Nat.Sulph 3x-6x


নবীনতর পূর্বতন