পক্ষাঘাত/প্যারালাইসিস (Paralysis) হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা।

পক্ষাঘাত বা ইংরাজীতে প্যারালিসিস (Paralysis) একপ্রকার দৈহিক বিকার যাতে মাংশপেশী স্বাভাবিক কাজ করার বদলে দুর্বল বা শিথিল (অথবা প্রকারভেদে আড়ষ্ট) হয়ে থাকে। এতে অঙ্গ প্রত্যঙ্গ অচল হয়ে পঙ্গুত্ব হতে পারে। পক্ষাঘাত একটি দুটি পেশীতে হতে পারে, এক বা একাধিক অঙ্গে হরে পারে বা পুরো শরীরে হতে পারে। অনেক সময়ই পক্ষাঘাতের সঙ্গে অবশতা অর্থাৎ স্পর্শ অনুভুতির অভাব হতে পারে, কিন্তু সবসময় নয়। পক্ষাঘাত স্বল্পস্থায়ী হতে পারে অথবা দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে। পক্ষাঘাত অন্য রোগের উপসর্গ অথবা একাই একটি ভয়াবহ রোগ হিসাবে হতে পারে, আবার পক্ষাঘাত খুব মৃদু এবং স্বল্পমেয়াদী হতে পারে যা আমরা প্রায় টেরও না পেতে পারি। দেখা গেছে গড়ে পঞ্চাশ জনের মধ্যে একজনের অল্পবিস্তর পক্ষাঘাত আছে।

বাংলা পক্ষাঘাত শব্দটি এসেছে পক্ষ + আঘাত থেকে। স্ট্রোক অথবা শিরদাঁড়ার একদিকে আঘাত লাগলে অনেক সময় শরীরের বিপরীত অর্ধেক অঙ্গ অবশ এবং পঙ্গু হয়ে যায়। শরীরের এক অর্ধ অর্থাৎ এক পক্ষ আঘাতগ্রস্ত হবার থেকেই সম্ভবতঃ এই শব্দটির উৎপত্তি।

পক্ষাঘাতের কারণ পেশী জনিত বা স্নায়ুজনিত হতে পারে। সাধারণতঃ স্নায়ুতে আঘাত দ্বারা শুরু হয়ে থাকে, বিশেষ করে শিরদাঁড়া (অর্থাৎ মেরুদণ্ডে) চোট লেগে, স্ট্রোক অথবা অন্যান্য আঘাত যার সঙ্গে স্নায়বিক আঘাত জড়িত থাকতে পারে।

Cousticum: শীতকাতর ব্যক্তির দেহের ডানপাশ আক্রান্ত, চোখ মুখ জিহ্বা বা কানের পক্ষাঘাত। ৩০-পর্যায়ক্রমে উচ্চশক্তি।

Gelsemium: গলনালী বা লেরিংসের পক্ষাঘাত, ডিপথেরিয়ার পর অন্ননালীর পক্ষাঘাত, চোখের পাতার, মলদ্বার পেশীর, মূত্রথলীর, জিহ্বার পক্ষাঘাত। ৩০-পর্যায়ক্রমে উচ্চশক্তি।

Plumbum Met: পক্ষাঘাতগ্রস্থ অঙ্গ গুটাইতে পারে কিন্তু ছড়াইতে বা ফেলতে পারেনা। অঙ্গটি ক্রমশঃ শুকিয়ে যায়, জিহবা ও অন্ননালীর পক্ষাঘাত, কোষ্ঠবদ্ধতা। ৩০-পর্যায়ক্রমে উচ্চশক্তি।

Elaps Corallinus: শরীরের ডানদিকের পক্ষাঘাত। ফল কিংবা ঠান্ডা দ্রব্য আহার অসহ্য লাগে। ২০০ শক্তি।

Lachesis: শীতকাতর রোগীর বাম অঙ্গ পক্ষাঘাতগ্রস্থ, আক্রান্ত স্থানে ঝিন ঝিনে ব্যাথা, নিদ্রাভাব কিংবা নিদ্রা ভঙ্গের পর রোগের বৃদ্ধি। ৩০-পর্যায়ক্রমে উচ্চশক্তি।

Mezerium: হাতের আঙুলে পক্ষাঘাত, কোন দ্রব্য মুঠো করে ধরতে অপারগ। ২০০ শক্তি উপকারী।

Lathyrus: বাতগ্রস্থ রোগীদের হঠাৎ অর্ধাঙ্গের আংশিক পক্ষাঘাত, হাঁটার সময় পা কাঁপে, বসে বসে অঙ্গটি গুটাইতে বা ছড়াইতে পারেনা কিন্তু শুয়ে থাকলে তা পারে। ৬-৩০ শক্তি প্রযোজ্য।

Merc Sol: অর্ধাঙ্গে বা সর্বাঙ্গে কম্পনযুক্ত পক্ষাঘাত। ৩০-২০০ শক্তি ফলপ্রদ।


বায়োকেমিকঃ
Kali Phos: সর্বপ্রকার পক্ষাঘাতের প্রধান ঔষধ। 6x-12x প্রযোজ্য।

Cal.Phos: রক্তশূন্য দুর্বল রোগীদের ঠান্ডা লেগে পক্ষাঘাত, আক্রান্ত স্থানে ঠান্ডা সুড়সুড় অনুভূতি। 6x-12x প্রযোজ্য।

Mag.Phos: হাত-পা মাথা কাঁপতে থাকে, খিঁচুনিযুক্ত পক্ষাঘাত। কেলি ফসের সাথে ৩x-৬x শক্তি সেব্য।

Nat.Mur: হাত-পা ভারী বোধ, কোষ্ঠবদ্ধ, কোন প্রকার সবিরাম জ্বরের পর পক্ষাঘাত, ক্রমাগত কম্পন চলাফেরায় কম্পন কমে। গরমকাতর, লবনপ্রিয়। ১২x শক্তি। হোমিও ২০০ শক্তিও কার্যকরী।




নবীনতর পূর্বতন